২৪হেল্পলাইন.কম/এপ্রিল, ২০১৮/হাসনাত বাদশা, হংকং
আবহমান গ্রাম-বাংলায় একসময় রাখালের গরুর পাল চোখে পড়তো আর গ্রীষ্মের খাড়া দুপুরের খা খা রদ্রুর মাঝে কানে ভাসতো বড় কোন বট বৃক্ষের ছায়াতলে বসে থাকা ক্লান্ত কোন এক রাখালের করুন বাঁশির সুর। পুরানো দিনের বাংলা গল্প উপন্যাসেও রাখাল চরিত্রের দেখা মিলতো হরহামেশাই। তবে আজ আর সেদিন নেই। মাঠে হাল চাষের জন্য গরু মহিষের দেখা মেলা যেমন দায় তদুরুপ, রাখাল বালকেরাও হারিয়ে গেছে সময়ের বিবর্তনে। যার কারনে অনেক দেশেই গরু মহিষ পালনে আর রাখাল বালকের প্রয়োজন নেই। এমনকি দুধের গাভীকে খাদ্য খাবার পরিবেশন থেকে শুরু করে দুধ দহন প্রক্রিয়াটিও রোবটের মাধ্যমে করা হয়ে থাকে।
২০১৫-তে সে আভিজ্ঞতা হয়েছিল নেদারল্যান্ডের ডেলফট সিটিতে অবস্থিত চিজ ফ্যাকটরী আর দুগ্ধ খামার পরিদর্শনে গিয়ে। একইভাবে সে একি অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হলাম দ্বিতীয়বারের মত হংকং এসে। গতকাল আমরা সবাই গিয়েছিলাম গ্রাসল্যান্ড আইল্যান্ড খ্যত এক পাহাড়ের উপরে কিছু দর্শনীয় স্থান পরিদর্শনে। সেখানে দেখলাম, অনেকগুলো গরু বিচরণ করছে স্বাধীনভাবে। পর্যটকদের সাথে গরুগুলোর বিশেষ ভাব গড়ে উঠাতে এরা মানুষকে একেবারেই ভয় পায়না। মুখে শব্দ করে হুস হাস যতই করেন গরুগুলো একদম নাছোড় বান্দা।একবারতো আমাদের এক বড় ভাইয়ের ব্যাগ থেকে পলিথিন শুধ্যা পাউরুটি কলা ছিন্তাই করে চোখের সামনে খেয়ে ছাড়লো। দুপুরের খাবারের উপরেও যথারীতি হামলা করার চেষ্টা হয়েছিল কিন্তু সফলতা আসেনি তার কারন, আমরা বাঙ্গালী বলে হয়তো এরকম নিরীহ গরুকে থোরাই কেয়ার করেছিলাম। যাহোউক, যেটা বলতে চাইছিলাম সেটা হলো এই গরুর গলাতে যে যন্ত্র দেখছেন সেটা হইলো জিপিএস মেশিন। অর্থাৎ, এই গরুগুলোর মালিক বাসা থেকেই জিপিএস দিয়ে ট্র্যাকিং করে থাকেন। তাই এদের পেছনে বাড়তি ঘাম ঝরানোর কোন প্রয়োজন নেই। এমনকি নেই কোন বাড়তি পয়সা খরচ করে রাখাল নিয়োগ করার। চিত্রগুলো দেখে বিষয়গুলো আরেকটু পরিষ্কারভাবে বুঝে নিতে পারেন।
চিত্র-১ঃ হংকং এর গ্রাসল্যান্ড আইল্যান্ডে জিপিএস মেশিন লাগানো গরু।
চিত্র-২ঃ গরুর বাটে রবোটিক সাকিং মেশিনে দুধ দহন করা হচ্ছে।
চিত্র-৩ঃ একটি ডিজিটালভাবে নিয়ন্ত্রিত অত্যাধুনিক গরুর খামার।