রোহিঙ্গা জীবনের গল্প-সীমান্তের ওপারেঃ পর্ব-০৪

Home/রোহিঙ্গা জীবনের গল্প-সীমান্তের ওপারেঃ পর্ব-০৪
See this post 1,970 views

রোহিঙ্গা জীবনের গল্প-সীমান্তের ওপারেঃ পর্ব-০৪

মংডু ॥ রাখাইন রাজ্য ॥ মিয়ানমার

রাগে গজরাতে গজরাতে দ্রুত পায়ে হাঁটতে থাকে আয়াস। ওর পিছু পিছু শকুরা। আয়াস বলতে থাকে- ওর কত বড় অহঙ্কার। আমাকে বললো ফেলের মধ্যে ফার্স্ট। ছেলেটা এমন কেন? মানুষের দুর্বলতা এভাবে তার সামনে বলে তাকে অপমান করবে, আমিও দেখে নেব।
কি করবে তুমি?
কেন? দেখবে আগামীবার আমিই প্রথম হবো। চ্যালেঞ্জ তো দিয়েছি।
শুধু চ্যালেঞ্জ করলে তো হবে না, কাজ করতে হবে। সবাই তো প্রথম হতে চায়; কিন্তু সবাই কি পারে?
তা পারে না। কিন্তু তুমি দেখ, আমি পারবো।
আচ্ছা তোমার ম্যাথে ফেল হলো কি করে?
আমার ম্যাথে একটু সমস্যা আছে আমি জানি, সেটাতেই প্রবলেম হয়েছে। আমি বীজগণিত পারছি না। বুঝতেই পারছি না।
আরে কি বলো তুমি? ম্যাথের মধ্যে তো এটাই সবচেয়ে সহজ।
তাই নাকি?
হ্যাঁ, আর তুমি সেটাই পারছো না! আশ্চর্য তুমি যে নম্বর পেয়েছ তার চেয়ে মাত্র ৩০ নম্বর বেশি পেয়েছে জো। তুমি যদি ম্যাথে ভালো করে ৮০ মার্কস পাও তাহলে ও তোমার সাথে পারবে না। আমি শিওর।
সত্যি বলছো?
হ্যাঁ।
তা হলে কি করা যায় আমার ম্যাথের ব্যাপারে। আমি গতকাল অনেক ভেবেছি। কারো কাছে পড়তে পারলে হতো, কিন্তু সেরকম কাউকে তো দেখছি না। ওদিকে জো, রেভো, ম অং কে তো দেখছি প্রায় সব সাবজেক্টই স্যারের কাছে পড়ে। তাও আবার স্কুলের টিচারের কাছে। স্কুলের স্যার তো অঙ্ক একটু ভুল হলেও মার্কস দিয়ে দেয়। স্বজনপ্রীতি। আমরা তো আর স্কুলের পাশে গিয়ে পড়তে পারবো না তাছাড়া অত কিয়েটই (মুদ্রা) বা দিবে কে?
আমার পরিচিত এক সিনিয়র ভাই আছেন পাশের গ্রামে। গত বছর মেট্রিকুলেশন পাস করেছেন। উনি রাজি হলে আমিও তোমার সঙ্গে পড়তে পারি। তাবিব ভাই আমাদের দূর সম্পর্কের আত্মীয়ও হন।
তাহলে তো খুবই ভালো কথা। এখন কথা বলে দেখ ওনাকে যদি রাজি করানো যায়।
তবে আজই চলো বিকেল বেলা, আমরা দু’জনই গিয়ে ওনাকে ব্যাপারটা খুলে বলি।
ঠিক আছে, বাড়ি গিয়ে খেয়ে দেয়ে আমরা বিকেল বেলা ওনার কাছে যাবো।

শরতের বিকেল, ওদের গ্রামের পাহাড়ের পিছনে দেড় কিলোমিটার দূরে পাশের গ্রামে তাবিবের বাড়ি। মাঝখানে শুধু মাটির একটি সংযোগ সড়ক।
দু’পাশে শুধুই দিগন্ত বিস্তৃত ধানক্ষেত। বহুদূরে গ্রাম ডান পাশে। বাম পাশেও সবুজ ধানের দোলা। সরু ঘাসের রাস্তাটি শুধু চলে গেছে সামনের গ্রামে।
গ্রামের নাম ওয়েট কেইন। গ্রামে ঢুকতেই বয়ে গেছে নদীর মতো একটি ছোট খাল। গ্রামটি বেশ লম্বা, প্রায় সবার কাঠের বাড়ি, মাঝে মাঝে দু-একটি বাড়ি শুধু দোতলা। অবশ্য সেগুলোও কাঠের। এই কাঠের বাড়িগুলো রাখাইনের ঐতিহ্য। ওয়েট কেইন গ্রাম মংডু আর বুথিডং সীমান্তে। মংডুর শেষ ওখানে আর বুথিডংয়ের শুরু। অবশ্য মংডু আর বুথিডংয়ের দূরত্ব ১৬ মাইল, বুথিডং আগে মংডুর মধ্যে ছিল।
মংডু আর বুথিডংয়ের মধ্যে দু’টি খাল দ্বারা যোগাযোগ স্থাপিত হয় এবং মাঝখানে ম-উ পর্বত। ম-উ পর্বতের শিখরে বিকেল বেলা যখন পড়ন্ত সূর্যের আলোকরশ্মি পতিত হয় তখন চমৎকার লাগে, বহুদূর থেকে দেখা যায়। মনে হয় হাত বাড়ালেই ছোঁয়া যাবে। আবার সকাল বেলা যখন কুয়াশাচ্ছন্ন থাকে ম-উ পর্বত তখন ভারী সুন্দর লাগে। আস্তে আস্তে রোদ উঠলে সকালের সোনাঝরা পর্বত চিকচিক করে ওঠে অপরূপ সৌন্দর্যে, মনে হয়- এইতো কাছে খুবই কাছে, হাত বাড়ালেই ছোঁয়া যাবে। পর্বত এরকমই মনে হয় খুব কাছে কিন্তু ছোঁয়া যায় না।
শেষমেষ ওরা তাবিবের কাছে আসে এবং তাকে রাজি করায়। তাবিব ৫০০ কিয়েট করে নিয়ে পড়াতে রাজি হয়। কথা হয় আগামীকাল বিকাল থেকে ওরা পড়তে আসবে। তাবিব ওদের এক ঘন্টা করে পড়াবে। ওরা রাজি হয়ে চলে আসে।
পরদিন ওরা পড়তে শুরু করে তাবিবের কাছে। তাবিবও পড়ায় খুব সুন্দর। যদিও সে স্কুলের শিক্ষক নয় তবুও তার বুঝাবার কায়দা খুব সুন্দর এবং ছাত্র-ছাত্রীদের সমস্যা সে খুব দ্রুত বুঝতে এবং সমাধান দিতে পারে। ওরা দু’জন এভাবে প্রতিদিন পড়তে থাকে।
আয়াসের ম্যাথের দুর্বলতা কেটে যেতে থাকে ধীরে ধীরে। সে অন্যান্য বিষয়ও ভাইয়ার কাছ থেকে বুঝিয়ে নেয়। শকুরারও যথেষ্ট উন্নতি হতে থাকে।
স্কুলের ক্লাস টেস্ট ও টার্ম পরীক্ষাগুলোয় ওরা দু’জন খুব ভালো করতে থাকে। এতদিন ওর দুর্বলতাগুলো বুঝিয়ে দেওয়ার অভাবে আয়াস পিছনে পড়ে ছিল। মার্কসও অন্যান্য বিষয়ে খুবই ভালো পেত। সব সময় চার পাঁচটা বিষয়ে সর্বোচ্চ নম্বর পেত, কিন্তু ম্যাথ না পারার কারণে সে বরাবর পিছিয়ে যেত।
এখন যেহেতু ম্যাথের সমস্যা সমাধান হয়েছে আয়াসকে আর পায় কে? ও নিশ্চিত এবার প্রথম হবেই। ক্লাসে এরই মধ্যে আয়াসের উত্থান নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে ছাত্র-শিক্ষকদের মধ্যে। আয়াসও যেন নব্য রূপ লাভ করেছে- আগে যে ইংরেজি পড়তে একদিন লাগতো এখন তা এক ঘন্টায় হয়ে যাচ্ছে। নিজে নিজেই ভাবে- হলো কি ওর? ও কি যাদুর কাঠি পেয়ে গেল? যাতে হাত দিচ্ছে তাতেই সফল হচ্ছে। ভাগ্য বিধাতা বোধ হয় এবার ওর দিকে মুখ তুলে চেয়েছেন। ওর ব্রেনটাও মনে হয় খুলে গেছে আগের চেয়ে বেশি করে। সবাই তাই বলাবলি করছে। আর আয়াস আছে ঘোরের মধ্যে। পড়াশোনার ঘোর। ঘুমের মধ্যেও স্বপ্ন দেখে পড়াশোনা করছে। অথবা মুখস্থ পড়াগুলো স্বপ্নের ভিতর মনে পড়ছে আর রিভিশন হয়ে যাচ্ছে। স্কুলে যে পরীক্ষা দিচ্ছে তাতেই সর্বোচ্চ মার্কস পাচ্ছে। তাই দেখে জো, রেভো, ম অংদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। রেভো আর জো নাকি রাত তিনটা পর্যন্ত পড়ে। রেভোর বাবা নাকি চায়ের ফ্লাস্ক কিনে দিয়েছে ছেলের জন্য রাত জেগে পড়ে দেখে। সব বিষয়ের জন্য স্যার দিয়েছে। ওরা ধনী তাই ওদের চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখছে না। এভাবে স্কুলে গেলেই শোনা যায় সবাই আলোচনা করছে ওদের প্রতিযোগিতার কথা। স্যারদের কানেও পৌঁছে গেছে ছাত্রদের আলোচনা। স্যাররাও অফিস রুমে আয়াসকে নিয়ে আলোচনা করছেন। ছেলেটা যেভাবে পড়ালেখা করছে তাতে আগামী মেট্রিকুলেশনে খুব ভালো রেজাল্ট আনবে স্কুলের জন্য। স্যাররা এজন্য খুব খুশি।
এদিকে জো, ম অং, রেভোদের মধ্যে সাজ সাজ রব পড়ে গেছে। কারণ আয়াসকে ঠেকাতে হবে। আয়াস আসছে। ২৬তম থেকে প্রথম। চারদিকে ছাত্রদের মধ্যে রব- আয়াস আসছে! ঠেকাও। অবশ্য এই প্রতিযোগিতা শুধু প্রথম পাঁচ-সাতজনের মধ্যে, সবাই যার যার পজিশন ধরে রাখা নিয়ে প্রাণপণ ব্যস্ত। এর মধ্যে শকুরাও যথেষ্ট উন্নতি করেছে। আয়াসের সঙ্গে আসতে যেতে এবং তাবিব ভাইয়ার কাছে একসাথে যাতায়াত করতে করতে ওরা খুব কাছাকাছি এসে পড়েছে। সকল বিষয় ওরা নিজেদের মধ্যে শেয়ার করে। সেটা ম্যাথ, ইংলিশ অন্য বিষয় এমনকি পড়াশোনার বাইরের অনেক কিছুও।
প্রতিদিন বিকালে সবুজ মাঠের বুক চিরে ধানের ক্ষেতের পাশ দিয়ে হেঁটে হেঁটে পড়ন্ত সূর্যের আভায় ঘরে ফেরে ওরা, কখন যে একে অন্যের হৃদয়ের কাছাকাছি এসে পড়েছে বুঝতে পারে না কেউই। শকুরা তো আয়াসের মেধায় মুগ্ধ। আয়াসও শকুরার সহযোগিতায় এগিয়ে চলে সামনের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে।
এর মধ্যে স্কুলের অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা হয়ে যায় এবং রেজাল্টও বের হয়।
রেজাল্ট বের হলে দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি বিষয়ে সর্বোচ্চ মার্কস পেয়েছে আয়াস। জো দুটি ও লি একটি বিষয়ে সর্বোচ্চ মার্কস পেয়েছে, এতে ওরা আরো সতর্ক হয়ে যায়। এভাবে কেটে যায় আরো ছয়টি মাস। পড়াশোনা, প্রাইভেট, হোমওয়ার্ক, স্কুলে এভাবে প্রতিনিয়ত আয়াসের প্রাণান্ত পরিশ্রম দেখে বাড়ি থেকে এখন আর কেউ কাজের কথা বলে না।
এরপর ওদের দশম শ্রেণির স্কুলের ফাইনাল পরীক্ষা হয়ে যায়। আয়াসের পরীক্ষা খুবই ভালো হয়। শকুরারও আশাতীত ভালো পরীক্ষা হয়। পরীক্ষার সময় হলে আয়াসের প্রায় জ্বর আসতো। তাই এবার আল্লাহর কাছে দোয়া করেছে যেন পরীক্ষার সময় জ্বর না আসে এবং সত্যি সত্যি আসেনি। সেজন্য পরীক্ষা খুব ভালো হয়েছে। তারপর আসে বহু প্রতীক্ষিত রেজাল্টের সময়। সবাই আজ অপেক্ষায়। কখন রেজাল্ট ঘোষণা করবেন স্যার। আয়াস অপেক্ষা করছে- হেডস্যারের হাত থেকে প্রথম পুরস্কার নেওয়ার জন্য। আয়াস জানে ও প্রথম হবেই। ওর পরীক্ষা এত ভালো হয়েছে যে, জো’র পারার কথা নয়। তবুও শঙ্কা যায় না। রেজাল্ট বের না হওয়া পর্যন্ত!
অবশেষে হেডস্যার ঘোষণা করেন সেই কাক্সিক্ষত, বিশেষ প্রতীক্ষিত রেজাল্ট।
প্রথম আয়াস।
দ্বিতীয় রেভো।
তৃতীয় হয় শকুরা।
চতুর্থ লি।
পঞ্চম হয় সঞ্চয় নামে একটা হিন্দু ছেলে।
ষষ্ঠ জো।
সবাই স্তম্ভিত এই রেজাল্টে। কি অবস্থা ছিল শ্রেণির আর আজ কি পরিবর্তন! সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন হয়েছে জো-এর। ও প্রথম থেকে ছয়ে নেমে গেছে। পুরো শ্রেণির অবস্থান ওলট-পালট হয়ে যায়। উত্থান হয় রেভো আর শকুরার। লি দুই ধাপ নেমে গেছে। সঞ্চয়ের আগে ৫ নম্বর আসন ছিল। ও তারটা ধরে রেখেছে আর কোথাও ছাড় না পেয়ে জো নেমে গেছে ছয়ে। জো যে খুব একটা খারাপ করেছে তাও নয়। ও গত বছর যে রকম মার্কস পেয়েছিল এবারও তাই পেয়েছে। কিন্তু অন্যরা এত ভালো করেছে যে ওর অবস্থান নেমে গেছে।

চারদিকে এখন শুধু আয়াস আর আয়াস। আয়াসের গুণগান, গ্রামের মুরব্বি মহল থেকে অন্যান্য লোকজন পর্যন্ত জেনে গেছে এই লড়াইয়ের খবর।
এরকম হাড্ডাহাড্ডি লড়াই নাকি স্কুলের ইতিহাসে আর হয়নি। শিক্ষকরাও বলছেন এ কথা।
শকুরা আয়াসকে অভিনন্দন জানায়। আয়াসও শকুরাকে। রেজাল্টের দিন জো স্কুলে আসেনি। শকুরা জিজ্ঞেস করলো আয়াসকে- কি জিতে তো গেলে চ্যালেঞ্জে! এখন কি জো’কে কিছু বলবে, আজ তোমার আশা পূর্ণ হয়েছে। প্রতিজ্ঞা পূরণ হয়েছে।
না কিছু বলবো না, পরাজিত প্রতিপক্ষকে কিছু বলবো না আমি। যা বলার এখন সবাই বলবে আর আমি চুপ। ক্রিকেট মাঠে যেমন খেলোয়াড়রা জবাব দেয় ব্যাট দিয়ে। আমি তেমন দিয়েছি রেজাল্ট দিয়ে, আমি মুখে কিছু বলবো না। যা হওয়ার হয়ে গেছে।
তা ঠিক। তবে তুমি বেশ উদারতার পরিচয় দিলে।
দেখ এসব ছোট খাট বিষয় নিয়ে পড়ে থেকে লাভ নেই। আমার দৃষ্টি আরো সামনে।
কি রকম?
তুমি তো সবই জানো। এই যেমন মেট্রিকুলেশনের পরে আমাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। কোথাও পড়াশোনার সুযোগ নেই। রাখাইনের বাইরে যাব- পড়ালেখা করবো সে সুযোগ নেই, সবাই আমাদেরকে বঞ্চিত করে রেখেছে। আমাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নিয়েছে সেই ১৯৮২ সালে। আমার জন্মের তিন বছর আগেই, মাতৃগর্ভে থাকার আগেই আমি হারিয়েছি জীবনের অধিকার! ওরা আমাদের বঞ্চিত করেছে। আমাদের নাগরিক সুবিধা কেড়ে নিয়েছে।
আমি সব বাধার দেয়াল ভেঙে ফেলবো, আমি সকল সমস্যার গভীরে গিয়ে কুঠারাঘাত করবো। আমি ছিন্নভিন্ন করে ফেলবো অন্যায়, অত্যাচার, নির্যাতন, নিপীড়ন আর নিষ্পেষণের কালো থাবা। গড়বো নতুন এক স্বদেশ। নতুন এক মংডু। নতুন দিগন্তে উদিত হবে ভোরের সোনালি সূর্য, যেখানে কেউ কারো অধিকার হরণ করবে না, কেউ বিনা চিকিৎসায় মারা যাবে না, সবাই লেখাপড়া শিখতে পারবে ইচ্ছামতো। সবাই সবখানে যেতে পারবে, কোনো বাধা থাকবে না। ওই আকাশের যেমন কোনো ভৌগোলিক সীমানা নেই, মেঘ বয়ে যায় এক দেশ থেকে আরেক দেশে, বাতাস বয়ে যায় সীমানা পেরিয়ে, পাখি উড়ে যায় সীমান্তের ওপারে। কই কেউ তো বাধা দেয় না। তবে আমাদের কেন বাধা থাকবে? আমরা রোহিঙ্গা বলে, আমরা মুসলমান বলে। আমি কোনো বাধা মানি না, আমি কোনো বাধা মানব না, আমি ছিন্নভিন্ন করে দেব সব অত্যাচারীর দুর্গ। মুক্ত শান্তির বাতাস প্রবাহিত হবে রাখাইনে, মংডুর পাহাড়ি সবুজ প্রান্তর উদ্ভাসিত হবে মুক্ত বাতাসে। মুক্ত হবে আমাদের স্বপ্ন, পিতৃপুরুষের স্বপ্নের স্বদেশ।
সে কাজ কি এতই সহজ? তুমি একা কীভাবে পারবে?
মানুষের মনে যদি স্বপ্ন থাকে তাহলে কোনোদিন না কোনো একদিন উপায় হবেই।

এর কিছুদিন পরে ওদের মেট্রিকুলেশন পরীক্ষা হয়ে যায় এবং আয়াস খুব ভালো রেজাল্ট করে। মংডু জেলায় এবং সমগ্র রাখাইনের মধ্যে ও প্রথম হয়। যেটা এই স্কুল থেকে কেউ কোনোদিন পারেনি। শকুরাও ভালো রেজাল্ট করে। জো, রেভো, ম অং রাও সবাই ভালো রেজাল্ট করে। শিক্ষকরা ওদের এই ব্যাচটাকে নিয়ে খুব গর্ব করেন, কেননা এই ব্যাচের (২০০২) মতো রেজাল্ট এই স্কুলে আর কখনো হয়নি, এটা একটা রেকর্ড। সেজন্য শিক্ষকরা ব্যাচটাকে নাম দেন- ‘সর্বকালের সোনালি ব্যাচ’। চোখ রাখুন “রোহিঙ্গা জীবনের গল্প-সীমান্তের ওপারেঃ ৫ম পর্বে”।

২৪হেল্পলাইন.কম/মে ,২০১৮/মোঃ সিরাজুল ইসলাম-এফসিএ

By | 2018-10-18T06:45:36+00:00 May 24th, 2018|Comments Off on রোহিঙ্গা জীবনের গল্প-সীমান্তের ওপারেঃ পর্ব-০৪